অ্যান্টিগা বিপর্যয়? ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ যা খেলেছে, তাতে এমন শিরোনাম করা যেতেই পারে। প্রথম ইনিংসে ৪৩ রানে গুটিয়ে গিয়ে ইনিংস ও ২১৯ রানের হার তো বড় বিপর্যয়ই। দ্বিতীয় ইনিংসেও ঘুরে দাঁড়ানোর কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে। দুটি ইনিংস মিলিয়ে মাত্র ১৮৭ রান করা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরাই মূলত দায়ী এই বিপর্যয়ের জন্য। তামিম ইকবাল সেই দায় নিচ্ছেন। অ্যান্টিগা টেস্টে আড়াই দিনের মধ্যে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের পেছনে তাঁর কোনো অজুহাত নেই।
তামিম নিজেও একেবারেই ভালো করতে পারেননি। দুই ইনিংস মিলিয়ে তাঁর মোট (৪ ও ১৩) রান ১৭। ফিরেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই পেসার কেমার রোচ ও শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের বলে আউট হয়ে। বাকিরা তাঁর মতোই ব্যর্থ। বাংলাদেশের দুই ইনিংস মিলিয়ে শুধু একটি ফিফটি (৬৪) তুলে নিতে পেরেছেন নুরুল হাসান সোহান। দ্বিতীয় ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ পেসার রুবেল হোসেনের (১৬)। ভুতুড়ে স্কোরবোর্ড বলতে যা বোঝায় ঠিক তাই। সমর্থক, সংবাদমাধ্যম আর খেলোয়াড়দের জন্যও এই স্কোরবোর্ড অবিশ্বাস্য, অনেক বড় ধাক্কা।
ভিডিও বার্তায় তামিম এ কথা স্বীকার করে নিলেন, ‘আমাদের শেষ টেস্ট ম্যাচটা আপনাদের জন্য যেমন ধাক্কা ছিল, আমাদের জন্যও তা–ই, একই রকম ধাক্কা ছিল। আমরা জানি, আমরা অনেক ভালো দল। কিন্তু যে ধরনের পারফর্ম করেছি, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না।’ টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ এই রান সংগ্রাহক জানিয়েছেন দলের বর্তমান মানসিক অবস্থাও, ‘দলের কেউ কোনো অজুহাত খোঁজার চেষ্টা করছে না। আমরা সবাই জানি, নিজেদের ভুলেই এটা হয়েছে। আমরা এটাই আশা করি পরের টেস্টে আমরা এর চেয়েও ভালো কোনো কিছু করার চেষ্টা করব।’
বাংলাদেশের দুই ইনিংসেই টপ অর্ডার ব্যর্থ হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছিল, স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামের বাইশ গজ হয়তো ব্যাটিংবান্ধব নয়? কিন্তু ক্যারিবীয়দের ইনিংসে একটি সেঞ্চুরি ও দুটি ফিফটি সেই প্রশ্নের জবাব। এমনকি বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে নিচের দিকের ব্যাটসম্যান সোহান ও পেসার রুবেল রান পাওয়ায় উইকেটকে দোষারোপ করার সুযোগ নেই তামিম-মুশফিকদের। সোহান ও রুবেল বেশ ১৩ ওভারেরও বেশি সময় উইকেটে ছিলেন। তামিম এখান থেকে শিক্ষা নিচ্ছেন এবং সতীর্থদেরও একই পরামর্শ দিলেন।
বাংলাদেশের এই ওপেনার বলেন, ‘যদি শেষ টেস্টে দেখেন লোয়ার অর্ডারে সোহান ও রুবেল অনেকক্ষণ ব্যাট করেছে। এটাই প্রমাণ করে যে উইকেটে যদি পর্যাপ্ত সময় থাকতে পারেন, তাহলে উইকেট যতই কঠিন হোক না কেন, আমরা রান করতে পারব। জ্যামাইকায় ১২ তারিখ (জুলাই) থেকে টেস্ট শুরু হচ্ছে। যে-ই সুযোগ পাক না কেন, ভালো করার চেষ্টা করবে। আপনাদের একটা ভালো টেস্ট উপহার দেওয়ার চেষ্টা করব আমরা।’